আপনি একজন বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সার ? পেতে চান ফ্রিল্যান্সার আইডি Freelancer ID । তাহলে আপনার অপেক্ষার পালা শেষ।ফ্রিল্যান্সারদের জন্য ফ্রিল্যান্সার আইডি কার্ড দেবে সরকার । দেশের প্রায় সাড়ে ৬ লাখ ফ্রিল্যান্সার পরিচয়পত্র গ্রহণের সুযোগ পাবেন।
উপার্জন বা দক্ষতার প্রমাণ হিসেবে কার্ডটি ব্যবহার করা যাবে। এ কার্ডে ফ্রিল্যান্সারদের জন্য ব্যাংকিং বা ভিসার আবেদন, বাসা বা অফিস ভাড়া এমনকি বাচ্চাদের স্কুলে ভর্তির মতো বিষয়গুলো সহজ করে দেবে।
Freelancer ID ফ্রিল্যান্সার আইডি পেতে আবেদন করবেন যেভাবে
ফ্রিল্যান্সার আইডিকার্ড প্রদানের জন্য একটা ওয়েব পোর্টাল তৈরি করা হয়েছে। যা থেকে ফ্রিল্যান্সাররা নিবন্ধন সম্পন্ন করে কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন। এতে ফ্রিল্যান্সারদের সামাজিক পরিচিতি তৈরির পাশাপাশি ব্যাংকঋণ পাবেন এবং তাঁদের ক্ষমতায়নে সহযোগিতা হবে। আইডিকার্ড পেতে নিবন্ধন করতে হবে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে।
বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সার আইডি কার্ড পেতে নিম্নোক্ত ধাপগুলো অনুসরণ করতে হবে:
যোগ্যতা:
- বাংলাদেশের নাগরিকত্ব: আবেদনকারীকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
- আয়ের প্রমাণ: সর্বশেষ ১২ মাসে কমপক্ষে ১,০০০ মার্কিন ডলার আয় থাকতে হবে।
- কাজের প্রমাণ: অনলাইন মার্কেটপ্লেসে কাজ করার এবং আয়ের প্রমাণ থাকতে হবে।
- বৈধ আয়: আয় বৈধ পথে দেশে আনতে হবে।
আবেদনের প্রক্রিয়া:
- সাইটে প্রবেশ: freelancers.gov.bd ওয়েবসাইটে যান।
- সাইন আপ: নাম (এনআইডি অনুযায়ী), ই-মেইল, মোবাইল নম্বর এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন।
- ই-মেইল ভেরিফিকেশন: ই-মেইল ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করে অ্যাকাউন্টে লগইন করুন।
- আবেদন ফর্ম পূরণ: ‘ফ্রিল্যান্সার আইডি’ বাটনে ক্লিক করে চার ধাপের ফর্ম পূরণ করুন:
- প্রথম ধাপ: নাম, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, ফোন নম্বর ইত্যাদি।
- দ্বিতীয় ধাপ: কাজের তথ্য এবং সর্বশেষ ১২ মাসের আয়ের পরিমাণ।
- তৃতীয় ধাপ: ক্যারিয়ার সম্পর্কিত তথ্য।
- চতুর্থ ধাপ: সাম্প্রতিক ছবি আপলোড।
- ফি পরিশোধ: আবেদনের জন্য ১,৫০০ টাকা ফি প্রদান করতে হবে, যা কার্ড বা মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে পরিশোধ করা যাবে।
- ডকুমেন্ট যাচাই: আবেদন জমা দেওয়ার পর, কর্তৃপক্ষ আপনার প্রদত্ত তথ্য যাচাই করবে এবং প্রয়োজন হলে অতিরিক্ত ডকুমেন্ট বা প্রমাণপত্র চাইতে পারে।
সুবিধাসমূহ:
- ব্যাংক থেকে ক্রেডিট কার্ড গ্রহণ।
- পাসপোর্ট ও ভিসার জন্য আবেদন।
- সরকারি বিভিন্ন সেবার জন্য আবেদন।
- ভবিষ্যতে আইটি খাতে সরকারের প্রদত্ত প্রণোদনা পাওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক।
নোট: প্রতি ১২ মাসে একবার তথ্য হালনাগাদ করতে হবে এবং হালনাগাদ ফি হিসেবে ১,৫০০ টাকা প্রদান করতে হবে।
ফ্রিল্যান্সিং কি?
ফ্রিল্যান্সিং হলো স্বাধীনভাবে কাজ করার একটি পদ্ধতি যেখানে ব্যক্তি বা পেশাদাররা কোনো নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী কর্মী না হয়ে প্রকল্প বা চুক্তির ভিত্তিতে কাজ করে থাকেন। সাধারণত, ফ্রিল্যান্সাররা বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম বা সরাসরি ক্লায়েন্টের মাধ্যমে কাজ পেয়ে থাকেন এবং কাজ শেষে পারিশ্রমিক গ্রহণ করেন।
ফ্রিল্যান্সিংয়ের বৈশিষ্ট্য:
- স্বাধীন কাজের সুযোগ: নির্দিষ্ট সময় বা অফিসের বাধ্যবাধকতা নেই।
- বৈচিত্র্যময় প্রকল্প: বিভিন্ন ধরনের কাজ করার সুযোগ থাকে।
- অনলাইনভিত্তিক উপার্জন: ইন্টারনেটের মাধ্যমে ঘরে বসেই উপার্জন করা যায়।
- গ্লোবাল মার্কেটপ্লেস: বিশ্বব্যাপী ক্লায়েন্টদের জন্য কাজ করার সুযোগ।
ফ্রিল্যান্সিংয়ের জনপ্রিয় ক্যাটাগরি:
- ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট
- গ্রাফিক ডিজাইন ও ভিডিও এডিটিং
- ডিজিটাল মার্কেটিং
- কনটেন্ট রাইটিং ও অনুবাদ
- ডাটা এন্ট্রি ও ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট
- এসইও (SEO) ও এসএমএম (SMM)
- অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট
- ফটোগ্রাফি ও অডিও প্রোডাকশন
জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম:
- Upwork
- Fiverr
- Freelancer
- Toptal
- PeoplePerHour
ফ্রিল্যান্সিংয়ের সুবিধা:
- নিজের সময় অনুযায়ী কাজ করার সুযোগ
- ঘরে বসেই বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের সম্ভাবনা
- ব্যক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধির সুযোগ
- একাধিক ক্লায়েন্টের সাথে কাজের অভিজ্ঞতা
ফ্রিল্যান্সিংয়ের চ্যালেঞ্জ:
- প্রতিযোগিতা বেশি হওয়ার কারণে ভালো কাজ পেতে সময় লাগতে পারে
- নির্দিষ্ট আয়ের নিশ্চয়তা নেই
- নিজেকে আপডেট রাখতে প্রতিনিয়ত নতুন দক্ষতা অর্জন করতে হয়
ফ্রিল্যান্সিং কীভাবে শুরু করবেন?
- নিজের দক্ষতা নির্ধারণ করুন।
- প্রয়োজনীয় ট্রেনিং বা কোর্স করুন।
- জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মে অ্যাকাউন্ট খুলুন।
- একটি ভালো প্রোফাইল তৈরি করুন।
- ছোট কাজের মাধ্যমে শুরু করুন এবং ধীরে ধীরে অভিজ্ঞতা ও রেটিং বাড়ান।
ফ্রিল্যান্সিং নতুনদের জন্য শিখতে ধৈর্য ও পরিশ্রম প্রয়োজন, তবে সঠিকভাবে কাজ করলে এটি হতে পারে একটি লাভজনক ক্যারিয়ার।